১১:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চারদিনে ধারাবাহিক ভাবে ৩২০০ মুরগি মারা যাওয়ায় খামারি এখন নিঃস্ব

  • Reporter Name
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০
  • 270
 করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। সময়মতো খাবার ও ওষুধ প্রয়োগ করতে না পারায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ক্ষুদ্র পোল্ট্রি খামারি আব্দুল মজিদের ৩ হাজার ২০০ মুরগি মারা গেছে। চারদিনের ধারাবাহিকভাবে এতোগুলো মুরগী মারা যাওয়ায় এখন নিঃস্ব এই খামারি।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারি আব্দুল মজিদ নানিয়াচর উপজেলার বগাছড়ির বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৪৫ বছর আমি কাপড়ের বোঝা কাঁধে নিয়ে ফেরি করে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করতাম। সন্তানদের সম্মানের কথা চিন্তা করে কৃষি ব্যাংক, গ্রামীণ সমিতি, একটি বাড়ি-একটি খামার থেকে ঋণ নিয়ে পোল্ট্রি খামারটি গড়ে তুলেছিলাম। বেশ ভালোভাবেই কয়েকটি চালান তুলে সেগুলো বিক্রি করে আরও বেশি করে বাচ্চা তুলে রমজানের শুরুতে বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল। এরই মধ্যে একমাস বয়সী মুরগিগুলোর জন্য খাবার সংকটে পড়ি।’

মজিদ আরও বলেন, ‘রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি যোগাযোগ করেও খাদ্য ও ওষুধ আনতে পারিনি। যার কারণে ২১ এপ্রিল থেকে খামারের মুরগিগুলো অজ্ঞাতরোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এরমধ্যে কিছু ওষুধ এনে খাওয়ালেও সেগুলো কাজ করেনি। ২৩-২৭ এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় আমার খামারের ৩ হাজার ২০০ মুরগী মারা গেছে।’

জীবনের অতিবাহিত দিনগুলোতে কারো কাছে হাত পাতেননি জানিয়ে আব্দুল মজিদ কান্না করতে করতে বলেন, ‘আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার সন্তানদের পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে যাবে। কীভাবে সামনের দিনগুলো যাবে আমার। কার কাছে সাহায্য চাইব আমি।’

ক্ষতিগ্রস্ত খামারির অনার্স পড়ুয়া বড় ছেলে মিরাজ বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় চাকরির আবেদন করে যখন হতাশ হয়েছি, তখন এই খামারটি আমাদের পরিবারকে অনেক স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু এই স্বপ্নই যে, দুঃস্বপ্নে রূপান্তরিত হতে পারে সেটি কখনো ভাবনায়ও আসেনি। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা না পেলে তিন ভাইয়ের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যাবে।’

এদিকে, নানিয়ারচরের উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। খামারি এক বছর ধরেই পোল্ট্রি খামার করে আসলেও উপজেলার তালিকাভুক্ত নয়। তারপরও আমি বিষয়টি জানার পর পরই সেখানে দুজন কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে সেখান থেকে চারটি মুরগি এনে পরীক্ষা করেছি। মূলত, রানীক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়ে এতবড় ক্ষতির মুখে পড়েছে খামারি।

Tag :

বালিয়াকান্দি মোটরসাইকেল সহ ইয়াবা ব্যবসায়ী গ্রেফতার ৩

You cannot copy content of this page

চারদিনে ধারাবাহিক ভাবে ৩২০০ মুরগি মারা যাওয়ায় খামারি এখন নিঃস্ব

প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০
 করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। সময়মতো খাবার ও ওষুধ প্রয়োগ করতে না পারায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ক্ষুদ্র পোল্ট্রি খামারি আব্দুল মজিদের ৩ হাজার ২০০ মুরগি মারা গেছে। চারদিনের ধারাবাহিকভাবে এতোগুলো মুরগী মারা যাওয়ায় এখন নিঃস্ব এই খামারি।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারি আব্দুল মজিদ নানিয়াচর উপজেলার বগাছড়ির বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৪৫ বছর আমি কাপড়ের বোঝা কাঁধে নিয়ে ফেরি করে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করতাম। সন্তানদের সম্মানের কথা চিন্তা করে কৃষি ব্যাংক, গ্রামীণ সমিতি, একটি বাড়ি-একটি খামার থেকে ঋণ নিয়ে পোল্ট্রি খামারটি গড়ে তুলেছিলাম। বেশ ভালোভাবেই কয়েকটি চালান তুলে সেগুলো বিক্রি করে আরও বেশি করে বাচ্চা তুলে রমজানের শুরুতে বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল। এরই মধ্যে একমাস বয়সী মুরগিগুলোর জন্য খাবার সংকটে পড়ি।’

মজিদ আরও বলেন, ‘রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি যোগাযোগ করেও খাদ্য ও ওষুধ আনতে পারিনি। যার কারণে ২১ এপ্রিল থেকে খামারের মুরগিগুলো অজ্ঞাতরোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এরমধ্যে কিছু ওষুধ এনে খাওয়ালেও সেগুলো কাজ করেনি। ২৩-২৭ এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় আমার খামারের ৩ হাজার ২০০ মুরগী মারা গেছে।’

জীবনের অতিবাহিত দিনগুলোতে কারো কাছে হাত পাতেননি জানিয়ে আব্দুল মজিদ কান্না করতে করতে বলেন, ‘আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার সন্তানদের পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে যাবে। কীভাবে সামনের দিনগুলো যাবে আমার। কার কাছে সাহায্য চাইব আমি।’

ক্ষতিগ্রস্ত খামারির অনার্স পড়ুয়া বড় ছেলে মিরাজ বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় চাকরির আবেদন করে যখন হতাশ হয়েছি, তখন এই খামারটি আমাদের পরিবারকে অনেক স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু এই স্বপ্নই যে, দুঃস্বপ্নে রূপান্তরিত হতে পারে সেটি কখনো ভাবনায়ও আসেনি। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা না পেলে তিন ভাইয়ের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যাবে।’

এদিকে, নানিয়ারচরের উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। খামারি এক বছর ধরেই পোল্ট্রি খামার করে আসলেও উপজেলার তালিকাভুক্ত নয়। তারপরও আমি বিষয়টি জানার পর পরই সেখানে দুজন কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে সেখান থেকে চারটি মুরগি এনে পরীক্ষা করেছি। মূলত, রানীক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়ে এতবড় ক্ষতির মুখে পড়েছে খামারি।