
348বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড চায় নাটোরের লালপুরের মোমেনা খাতুন(৯৫) ও তার নাতি সজিব(১৮)। মোমেনা খাতুন উপজেলার দুয়ারিয়া ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত তুরাপ প্রামাণিকের স্ত্রী ও সজিব তার একমাত্র ছেলে দুলাল প্রামাণিকের সন্তান। বৃদ্ধা মোমেনা খাতুন ও প্রতিবন্ধী সজিবের অভিযোগ তারা ভাতা কার্ড পাওয়ার উপযুক্ত হলেও অদৃশ্য কারনে জনপ্রতিনিধিরা তাদের সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেন। প্রতিবন্ধী সজিবের পিতা ও মোমেনা খাতুনের ছেলে দুলাল প্রামানিকই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সে অন্যের জমিতে দিনমজুরী করে কোনরকমের সংসার চালায়। কিন্তু স্ত্রী সন্তান ও মায়ের তিন বেলা ভাত জোটাতে পারলেও বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসা করাতে হিমসিম খান। নিজের বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী নাতির ভাতা কার্ডের জন্য জনপ্রতিনিধিরে কাছে বারবার ধর্ণা ধরেও শূন্য হাতে ফিরে আসা বৃদ্ধা মোমেনা সম্প্রতি স্থানীয় এক সাংবাদিক বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হাত ধরে অনুরোধ করে বলেন, আমারে একটু পেপারে তুলে দাও ভাই, এমপি যেন দেখতে পায়। পাড়ার সবাই সরকার থাকি ট্যাকা পায়। আর আমারে কেউ দেখতে পায়না। আমার থাকি বয়সে ছুটু কতজন বয়স্ক ভাতার ট্যাকা পায়। আর আমার একটা কার্ড কেউ করি দেয় না। আমার ব্যাটা মানুষের কামলা দিয়া সংসারই চলাতে পারে না। একটা মাত্র নাতি, তাউ প্রতিবন্ধী, বড় হচ্ছে না, বুদ্ধি নাই, কাম কাইজ ও করতে পারে না। ব্যাটা একলা কামলা দিয়া চারজনের খরচ চালায়। সরকার যদি ওষুধ কিনার ট্যাকা দিলিনি তাউ একটু উপকার হলিনি। নাতিটার জন্য একটা প্রতিবন্ধী কার্ড দিলে তাও একটু উপকার হলিনি। বিশ বছর আগে স্বামী ডা মারা গিছে। কতজন বিধবা ভাতার ট্যাকা পায়। আর আমি কিছুই পাবো না ক্যা। মেম্বার চেয়ারম্যান কয় আমরা নাকি বড়লোক। বড়লোক কোনদিন কামলা খাটে, কওতো দেখি। মানুষ কয় পেপারে ছাপলে নাকি আমরা ট্যাকা পাবো। এমপি দেখলে নাকি ট্যাকা দেয়। আমাক আর আমার নাতি ডাক একটা ছবি তুলে পেপারে দেও তো ভাই। এমপি যেন দেখতে পায়…………..।
অথবা,
এমপি যেন দেখতে পায়
নেওয়াজ মাহমুদ নাহিদ (লালপুর) নাটোর প্রতিনিধি: আমারে পেপারে তুলে দাও ভাই এমপি যেন দেখতে পায়। পাড়ার সবাই সরকার থাকি ট্যাকা পায়। আর আমারে কেউ দেখতে পায়না। আমার থাকি বয়সে ছুটু কতজন বয়স্ক ভাতার ট্যাকা পায়। আর আমার একটা কার্ড কেউ করি দেয় না। আমার ব্যাটা মানষের কামলা দিয়া সংসার ই চালাতে পারে না। একটা মাত্র নাতি তাউ প্রতিবন্ধী, বড় হচ্ছে না, বুদ্ধি নাই, কাম কাইজ ও করতে পারে না। ব্যাটা একলা কামলা দিয়া চারজনের সংসার চালায়। সংসার যদি ওষুধ কিনার ট্যাকা দিলিনি তাউ একটু উপকার হলিনি। নাতিটার জন্য একটা প্রতিবন্ধী কার্ড দিলে তাও একটু উপকার হলিনি। বিশ বছর আগে স্বামী ডা মারা গিছে। কত ছোট ছোট মেয়েরা বিধবা ভাতার ট্যাকা পায়। আর আমি পাবো না ক্যা। মেম্বার চেয়ারম্যান কয় আমরা নাকি বড়লোক। বড়লোক কোনদিন কামলা খাটে কওতো দেখি। মানুষ কয় পেপারে ছাপলে নাকি আমরা ট্যাকা পাবো। এমপি দেখলে নাকি ট্যাকা দেয়। আমারে দাতী-নাতির একটা ছবি তুলে পেপারে দাও ভাই। এমপি যেন দেখতে পায়। এভাবেই কথা গুলো স্থানীয় এক সাংবাদিককে বলছিলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার দুয়ারিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের শতবর্ষী বৃদ্ধা মোমেনা খাতুন। তিনি ঐ গ্রামের মৃত তুরাপ প্রামানিকের স্ত্রী। তার একমাত্র ছেলে ছেলে দুলাল প্রামানিক অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে কোন রকমে সংসার চালায়। একমাত্র নাতি সজিব প্রামাণিক শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিন বেলা ভাত কোন রকমে জুটলেও বার্ধক্যজনিত রোগের চিকিৎসা ও ওষুধ জুটেনা বৃদ্ধা মোমেনা খাতুনের। মোমেনা খাতুনের বয়স ৯৫ বছর। চোখে মুখে হতাশার ছাপ। নিজের বয়স্ক ভাতা ও নাতির জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করতে চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে বারবার গেলেও ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। অসংখ্যবার ছবি ভোটার আইডি কার্ড নিলেও জুটেনি ভাতার টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ভাতাভোগী বাছাইয়েও অংশগ্রহণ করেছেন মোমেনা খাতুন। কিন্তু মৃত্যুর আগে ভাতা কার্ড দেখে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ মোমেনা খাতুনের।