
ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আজারবাইজান প্রদেশে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। গতকাল শুক্রবার সকালের দিকে আঘাত হানা এ ভূমিকম্পে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কমপক্ষে ৬ জন নিহত ও ৩ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে জানা গেছে। আল-জাজিরা।
গতকাল প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা দ্য ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিসি) বলেছে, আজারবাইজান প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর তাবরিজের ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের হাসত্রুদ শহরে শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। শহরটি আজারবাইজান থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এদিকে এ ভূমিকম্পে একশ থেকে এক হাজার মানুষের প্রাণহানি হতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে ইউ.এস.জি.সি।
অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ২ কোটি মানুষ এ ভূকম্পন অনুভব করে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয়-ভূমধ্য অঞ্চল বিষয়ক আবহাওয়া কেন্দ্র ইএমএসসি। ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎসস্থল হওয়ায় বেশিমাত্রায় এর প্রভাব পড়ে। একই তথ্য জানায় ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনাও। তারা জানায়, ভূমিকম্পটিতে তুলনামূলক বেশি কম্পন অনুভূত হয়। বেশকিছু শহরে এর প্রভাব পড়ে। রাতের অন্ধকারে আতঙ্কিত মানুষজন ঘরবাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে। ভৌগোলিকভাবে দুটি বড় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের ওপর অবস্থিত ইরান। ফলে এখানে প্রায়ই ভূকম্পন হয়। গত কয়েক দশকে অনেক বড় বড় ভূমিকম্পের মুখোমুখি হয়েছে ইরান। এর মধ্যে ২০০৩ সালে বাম শহরে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে অন্তত ৩১ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এর আগে ১৯৯০ সালে উত্তর ইরানে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার প্রাণঘাতী আরেক ভূমিকম্পে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত ও ৩ লাখ আহত হয়। সেবার ৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। ডজন খানেক শহর ও প্রায় ২ হাজার গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এছাড়াও ২০০৫ ও ২০১২ সালে আরও দুই ভূমিকম্পে যথক্রমে ৬শ’ ও ৩শ’ মানুষের প্রাণহানি হয়।